8:13 am, Friday, 14 February 2025

বিমানে ওঠার আগেই গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

  • Reporter Name
  • Update Time : 07:11:55 am, Tuesday, 14 January 2025
  • 7 Time View

ময়মনসিংহের নান্দাইলে কলেজছাত্র মুরাদ হাসান (১৭) হত্যা মামলার মূলহোতা ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল আলম হামিম বিদেশে পালিয়ে যেতে চাইলে বিমানে ওঠার আগেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় স্বস্তি ফিরেছে ভুক্তভোগী বাদী পরিবারে।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে ঢাকাস্থ শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শনিবার দুপুরে ঢাকা পোস্টকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ আহম্মেদ।

তিনি বলেন, চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলমান ছিল। এই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা হামিম বিদেশ চলে যাওয়ার জন্য সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। ফলে যে কোনো সময় তিনি বিদেশে পাড়ি দিতে পারেন। এ অবস্থায় গতকাল শুক্রবার কাতার যাওয়ার পূর্ব মুহুর্তে তাকে বিমানবন্দর থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়।

ওসি আরও বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আসামিকে নান্দাইল থানা পুলিশের হেফাজতে নিয়ে আসার কাজ প্রক্রিয়াধীন, বিস্তারিত পরে প্রেস বিফ্রিংয়ে জানানো হবে।

গ্রেপ্তার হওয়া আশরাফুল আলম উপজেলার আলাবক্সপুর গ্রামের মো. আবুল কালামের ছেলে। তিনি নান্দাইল শহীদ স্মৃতি আদর্শ ডিগ্রি কলেজ শাখার ছাত্রলীগ নেতা। অপর দিকে নিহত মুরাদ হচ্ছেন নান্দাইল পৌসভার কাকচর মহল্লার বাসিন্দা মো. তফাজ্জল হোসেনে ছেলে।

স্থানীয় সূত্র ও মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, বিগত নান্দাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালে স্বতন্ত্র এক প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় লিফলেট বিতরণ করছিলেন কলেজছাত্র মুরাদসহ অনেকেই। এ সময় তাদের নির্বাচনী প্রচারে বাধা দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থক স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতারা। এ সময় তারা  স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণাকারীদের মারধরসহ ধাওয়া দেয়। এ ঘটনার এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণাকারীদের ধাওয়া দিয়ে স্থানীয় চন্ডীপাশা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠের কিনারায় নিয়ে মুরাদসহ অনেককেই লাঠিসোঁঠা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে মারধর করেন।

এতে অন্যরা সামান্য আহত হয়ে পালিয়ে রক্ষা পেলেও মুরাদ মাটিতে পড়ে যাওয়ায় ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল আলম হামিম ভিকটিম মুরাদের বুকের ওপর উঠে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করেন। পরে আহত অবস্থায় মুরাদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় ১১ জনকে অভিযুক্ত করে নিহতের পরিবার একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে নান্দাইল থানা পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকেই এই হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা হামিম পলাতক ছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

News Team

Popular Post

বিমানে ওঠার আগেই গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

Update Time : 07:11:55 am, Tuesday, 14 January 2025

ময়মনসিংহের নান্দাইলে কলেজছাত্র মুরাদ হাসান (১৭) হত্যা মামলার মূলহোতা ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল আলম হামিম বিদেশে পালিয়ে যেতে চাইলে বিমানে ওঠার আগেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় স্বস্তি ফিরেছে ভুক্তভোগী বাদী পরিবারে।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে ঢাকাস্থ শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শনিবার দুপুরে ঢাকা পোস্টকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ আহম্মেদ।

তিনি বলেন, চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলমান ছিল। এই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা হামিম বিদেশ চলে যাওয়ার জন্য সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। ফলে যে কোনো সময় তিনি বিদেশে পাড়ি দিতে পারেন। এ অবস্থায় গতকাল শুক্রবার কাতার যাওয়ার পূর্ব মুহুর্তে তাকে বিমানবন্দর থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়।

ওসি আরও বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আসামিকে নান্দাইল থানা পুলিশের হেফাজতে নিয়ে আসার কাজ প্রক্রিয়াধীন, বিস্তারিত পরে প্রেস বিফ্রিংয়ে জানানো হবে।

গ্রেপ্তার হওয়া আশরাফুল আলম উপজেলার আলাবক্সপুর গ্রামের মো. আবুল কালামের ছেলে। তিনি নান্দাইল শহীদ স্মৃতি আদর্শ ডিগ্রি কলেজ শাখার ছাত্রলীগ নেতা। অপর দিকে নিহত মুরাদ হচ্ছেন নান্দাইল পৌসভার কাকচর মহল্লার বাসিন্দা মো. তফাজ্জল হোসেনে ছেলে।

স্থানীয় সূত্র ও মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, বিগত নান্দাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালে স্বতন্ত্র এক প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় লিফলেট বিতরণ করছিলেন কলেজছাত্র মুরাদসহ অনেকেই। এ সময় তাদের নির্বাচনী প্রচারে বাধা দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থক স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতারা। এ সময় তারা  স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণাকারীদের মারধরসহ ধাওয়া দেয়। এ ঘটনার এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণাকারীদের ধাওয়া দিয়ে স্থানীয় চন্ডীপাশা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠের কিনারায় নিয়ে মুরাদসহ অনেককেই লাঠিসোঁঠা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে মারধর করেন।

এতে অন্যরা সামান্য আহত হয়ে পালিয়ে রক্ষা পেলেও মুরাদ মাটিতে পড়ে যাওয়ায় ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল আলম হামিম ভিকটিম মুরাদের বুকের ওপর উঠে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করেন। পরে আহত অবস্থায় মুরাদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় ১১ জনকে অভিযুক্ত করে নিহতের পরিবার একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে নান্দাইল থানা পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকেই এই হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা হামিম পলাতক ছিলেন।