7:38 am, Friday, 14 February 2025

স্বাধীনতার পর থেকে একটি দল সংখ্যালঘু বলে ফায়দা লুটে নিয়েছে- জামায়াত আমীর

  • Reporter Name
  • Update Time : 04:12:25 am, Saturday, 11 January 2025
  • 17 Time View

ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে জেলা স্কুল বড় মাঠে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীরে জামায়াত এসব কথা বলেন। জেলা আমীর অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন প্রধানের সভাপতিত্বে ও  জেলা সেক্রেটারি আলমগীর হোসেনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, ঠাকুরগাও জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা আব্দুল হাকিম, সাবেক শিবির সভাপতি ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য দেলোয়ার হোসেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ছোট একটি দেশ। ছোট এই বাংলাদেশে ১৮ কোটি মানুষ। কিন্তু জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে পরিণত করতে পারিনি। তাদের হাতকে কর্মের হাতে পরিণত করতে পারলে দেশের চেহারা পাল্টে যেত।

জামায়াতের ১১ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে হত্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, খুন, লুন্ঠন ও নির্যাতনের সাড়ে ১৫ বছর পর মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে। এই সাড়ে ১৫ বছরে অনেকে জীবন দিয়েছে, অনেকে আহত হয়েছে, অনেকের বাড়ি ঘর ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। জামায়াতে নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। নেতাকর্মীদের ঘর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কুরআনের পাকি আল্লামা সাঈদীকেও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হলো। তার জানাযায় যেন মানুষ না আসতে পারে এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনেক চেষ্টা করার পরও বৃষ্টির মধ্যে মানুষ জানাযায় অংশ নিয়ে তাকে বিদায় দিয়েছে।

আমীরে জামায়াত বলেন, “বুকের ভেতর তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর” শ্লোগান দিয়ে ছাত্ররা রাস্তায় নেমেছিল। তারা বুক পেতে অস্ত্রের মুখে দাঁড়িয়েছিল। এক মন্ত্রীকে পুলিশ বলেছিল, একটি গুলি করি একজন মরে আর চারজন দাঁড়িয়ে যায়। এমন জাতি তৈরী হওয়ায় আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতেও যাতে জাতির জন্য এমন ছেলেরা দাঁড়িয়ে যায় সে আহবান তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, কারা জাতির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়। ৫ আগস্টের বিপ্লবের পর চারদিন দেশে কোন সরকার ছিল না। ইসলামপন্থীরা চারদিন সারা দেশে পাহারা দিয়েছে। দূর্গাপূজায় গন্ডগোল করতে চেয়েছিল। আমরা জামায়াতের পক্ষ থেকে তাদের পূজায় পাহারা দিয়েছি। আমরা চাই না কোন ধর্মীয় উপাসনালয়ে পাহারা দেয়া লাগুক। মসজিদে পাহারা দেয়া না লাগলে মন্দিরেও যাতে পাহারা দিতে না হয় এমন নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলতে চাই।

তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ১৬ ডিসেম্বর তাদের বিজয় বলে দাবি করেছে। সেখানে তিনি একটিবারও বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করেননি। তার কথার বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদ করেনি। প্রতিবেশী দেশ প্রতিবেশীর মতো থাকুক। কিন্তু তারা মাঝে মাঝে বর্ডার ক্রস করে বাংলাদেশের তরকারিতে লবন দিতে আসে। আমরা আমাদের তরকারিতে আমরাই লবন দিব।

তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্ম বিগত তিনটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। ছাত্রদের সার্টিফিকেট দেয়া হয় কিন্তু চাকরি দেয়া হয় না। ছোট একটি দাবির জন্য রাস্তায় নেমেছিল কিন্তু তাদের দাবি পূরণ না করে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হলো। অসংখ্য মানুষ পঙ্গু হয়েছে, চোখ হারিয়ে কাতরাচ্ছে। তাদের এক অধিকারের সাথে সকল অধিকার এক হয়ে মানুষের মুক্তির আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

News Team

Popular Post

স্বাধীনতার পর থেকে একটি দল সংখ্যালঘু বলে ফায়দা লুটে নিয়েছে- জামায়াত আমীর

Update Time : 04:12:25 am, Saturday, 11 January 2025

ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে জেলা স্কুল বড় মাঠে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীরে জামায়াত এসব কথা বলেন। জেলা আমীর অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন প্রধানের সভাপতিত্বে ও  জেলা সেক্রেটারি আলমগীর হোসেনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, ঠাকুরগাও জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা আব্দুল হাকিম, সাবেক শিবির সভাপতি ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য দেলোয়ার হোসেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ছোট একটি দেশ। ছোট এই বাংলাদেশে ১৮ কোটি মানুষ। কিন্তু জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে পরিণত করতে পারিনি। তাদের হাতকে কর্মের হাতে পরিণত করতে পারলে দেশের চেহারা পাল্টে যেত।

জামায়াতের ১১ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে হত্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, খুন, লুন্ঠন ও নির্যাতনের সাড়ে ১৫ বছর পর মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে। এই সাড়ে ১৫ বছরে অনেকে জীবন দিয়েছে, অনেকে আহত হয়েছে, অনেকের বাড়ি ঘর ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। জামায়াতে নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। নেতাকর্মীদের ঘর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কুরআনের পাকি আল্লামা সাঈদীকেও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হলো। তার জানাযায় যেন মানুষ না আসতে পারে এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনেক চেষ্টা করার পরও বৃষ্টির মধ্যে মানুষ জানাযায় অংশ নিয়ে তাকে বিদায় দিয়েছে।

আমীরে জামায়াত বলেন, “বুকের ভেতর তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর” শ্লোগান দিয়ে ছাত্ররা রাস্তায় নেমেছিল। তারা বুক পেতে অস্ত্রের মুখে দাঁড়িয়েছিল। এক মন্ত্রীকে পুলিশ বলেছিল, একটি গুলি করি একজন মরে আর চারজন দাঁড়িয়ে যায়। এমন জাতি তৈরী হওয়ায় আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতেও যাতে জাতির জন্য এমন ছেলেরা দাঁড়িয়ে যায় সে আহবান তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, কারা জাতির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়। ৫ আগস্টের বিপ্লবের পর চারদিন দেশে কোন সরকার ছিল না। ইসলামপন্থীরা চারদিন সারা দেশে পাহারা দিয়েছে। দূর্গাপূজায় গন্ডগোল করতে চেয়েছিল। আমরা জামায়াতের পক্ষ থেকে তাদের পূজায় পাহারা দিয়েছি। আমরা চাই না কোন ধর্মীয় উপাসনালয়ে পাহারা দেয়া লাগুক। মসজিদে পাহারা দেয়া না লাগলে মন্দিরেও যাতে পাহারা দিতে না হয় এমন নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলতে চাই।

তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ১৬ ডিসেম্বর তাদের বিজয় বলে দাবি করেছে। সেখানে তিনি একটিবারও বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করেননি। তার কথার বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদ করেনি। প্রতিবেশী দেশ প্রতিবেশীর মতো থাকুক। কিন্তু তারা মাঝে মাঝে বর্ডার ক্রস করে বাংলাদেশের তরকারিতে লবন দিতে আসে। আমরা আমাদের তরকারিতে আমরাই লবন দিব।

তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্ম বিগত তিনটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। ছাত্রদের সার্টিফিকেট দেয়া হয় কিন্তু চাকরি দেয়া হয় না। ছোট একটি দাবির জন্য রাস্তায় নেমেছিল কিন্তু তাদের দাবি পূরণ না করে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হলো। অসংখ্য মানুষ পঙ্গু হয়েছে, চোখ হারিয়ে কাতরাচ্ছে। তাদের এক অধিকারের সাথে সকল অধিকার এক হয়ে মানুষের মুক্তির আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।