8:26 am, Friday, 14 February 2025

সীমান্তে ‘জয় শ্রী-রাম’, ‘আল্লাহু আকবার’ স্লোগান; কী হয়েছিল?

  • Reporter Name
  • Update Time : 03:31:38 am, Sunday, 12 January 2025
  • 17 Time View
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের একটি অংশে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়ে তিন দিন ধরে একরকম টানাপড়েন বা উত্তেজনার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং নওগাঁ জেলা সংলগ্ন সীমান্তের ভারতের দিকের অংশে বেড়া নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশ অংশ থেকে বাধা দেয়া হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা সীমান্তের বাংলাদেশ-ভারত দুই দিকেই গ্রামের মানুষজন জড়ো হয় সীমান্তরক্ষীদের সাথে। দুই দিকেরই বেশকিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।

এতে দেখা গিয়েছে বাংলাদেশ অংশে বেশি সংখ্যক লোকজন জড়ো হয়েছে, অন্যদিকে ভারত অংশে কিছু মানুষকে লাঠি রামদা, কাস্তের মতো অস্ত্র হাতে ‘বান্দে মাতরম’ স্লোগান দিতেও দেখা যায়। যদিও বিবিসি স্বাধীনভাবে এ ভিডিও যাচাই করতে পারেনি।ঘটনার সূত্রপাত হয় সোমবারে। চৌকা সীমান্তের অপর পারে ভারতের মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগর থানার সুকদেবপুর এলাকায় বেড়া নির্মাণের তৎপরতা দেখা যায়।

সীমান্তের ১২০০ গজের মতো অংশে কোনও কাঁটাতারের বেড়া ছিল না এবং সেই বেড়া তৈরির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে ভারতের অভ্যন্তরে ১০০ গজ ভেতরে মাটি খোঁড়া হচ্ছিল বলে জানান ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া। বিজিবি থেকে এনিয়ে বাধা দেয়া হয় এবং সাময়িকভাবে কাজ থামানো হয়।

নিয়ম অনুযায়ী সীমান্ত লাইন থেকে দেড়শ গজের মধ্যে কিছু করা হলে সেটা অপর পাশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে সঠিক নিয়ম মেনে অবহিত করতে হয় যেটা এক্ষেত্রে ভারতের বিএসএফ বাংলাদেশের বিজিবিকে জানায়নি বলে জানান লে. কর্নেল কিবরিয়া।

সোমবার দুই দেশের বাহিনীর পতাকা-বৈঠক হলেও মঙ্গলবারে আবারও নির্মাণকাজ শুরু হয়।

মঙ্গলবারেও দুই পক্ষের বৈঠক হয় এবং তার পরও বুধবারে আবারও একই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হয়।এনিয়ে স্থানীয় দুজন সাংবাদিক বিবিসি বাংলাকে জানান মূলত মঙ্গলবার ও বুধবারে ব্যাপকহারে মানুষের জমায়েত বেড়ে যায় এবং একরকম উত্তেজনার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ভারতের দিকেও বিএসএফের সাথে সেখানকার স্থানীয় লোকজনও ছিল।

বাংলাদেশের অংশের মানুষ ভারতের উদ্দেশে এবং ভারতীয় অংশের মানুষ বাংলাদেশের উদ্দেশে স্লোগান দেন বলে জানান বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন।

তিনি বলেন, “পাবলিক পাবলিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে, এসো, সামনাসামনি হও, দুঘণ্টার মধ্যে দখল করে নিবো”

ভারতের অংশে তোলা কিছু ছবি ও ভিডিও বিবিসিকে পাঠান বাংলাদেশি অংশের স্থানীয় সাংবাদিক মো. কাওসার আহমেদ।

সেখানে অনেকর হাতে রামদা দেখা গেলেও একরকম হাস্যরসাত্মক পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়। যেমন- একজন রামদা শানাচ্ছেন বাংলাদেশ থেকে কেউ এলে কাটার জন্য শান দিচ্ছেন বলে হাসতে হাসতে জানান। আরেকজন কাঁধে বস্তা নিয়ে মশকরাচ্ছলে ভিডিওতে বলছেন, “বোম, বোম, বোম, ফুটিয়ে দেব বাংলাদেশকে।”বাংলাদেশ অংশের মানুষের মধ্যে অবশ্য উৎসাহ উদ্দীপনার পাশাপাশি উৎকণ্ঠাও ছিল বলে জানান কাওসার আহমেদ যিনি সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিদিনই ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।

তিনি বলছিলেন, অপরপাশ থেকে ‘বন্দে মাতারাম’ ‘জয় শ্রীরাম’ এমন স্লোগান দেয়া হচ্ছিলো, তখন এপারের মানুষ ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার’ বলে জবাব দেয়। এখানে বাংলাদেশ অংশে সীমান্ত ঘেঁষে যেসব কৃষকদের জমি রয়েছে তাদের মধ্যে শঙ্কার জায়গাটা বেশি।

সবশেষ সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ের সৌজন্য সাক্ষাতের পর বিষয়গুলো ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে অবহিত করা হয়েছে এবং এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। বৃহস্পতিবার আর নির্মাণকাজ চালানো হয়নি বলে জানান ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া।

বিজিবির বেশ কয়েকজন জানান আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী শূন্য রেখা বরাবর দুই দেশের অন্তত দেড়শ গজের মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণ করতে হলে দুই দিকের সম্মতির প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশ-ভারতের ১৯৭৫ সালের নীতিমালা অনুযায়ী সীমান্ত লাইন নির্ধারিত হওয়ার পর লাইনের উভয় পাশে ১৫০ গজের মধ্যে কোনও পক্ষই স্থায়ী বা অস্থায়ী সীমান্ত রক্ষী বা সশস্ত্র কর্মী রাখবে না এবং উভয় পাশে ১৫০ গজের মধ্যে (মোট ৩০০ গজ এলাকায়) কোনও প্রতিরক্ষামূলক কাঠামো, যেমন পরিখা বা অন্যকিছু থাকলে সেগুলো ধ্বংস বা ভরাট করতে হবে।

বিএসএফের একজন কর্মকর্তা অবশ্য বিবিসি বাংলার কলকাতা প্রতিনিধিকে জানান বেড়া নির্মাণের কাজটি আগে থেকে অনুমোদন সাপেক্ষেই করা হয়েছে।

মঙ্গলবারে বিএসএফের সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি এবং মুখপাত্র এন কে পাণ্ডে বিবিসিসহ পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিকদের জানান তেমন কোনও সমস্যার কিছু না, আমাদের বেড়া নির্মাণের কাজ চলছে, যেটায় অপর পাশ থেকে আপত্তি জানানো হয়েছিল যার জবাব দেয়া হয়েছে, কাজের অগ্রগতি চলছে।

যদিও বৃহস্পতিবারে আর নির্মাণকাজ আর চালু করা হয়নি বলে জানানো হচ্ছে বিজিবির দিক থেকে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে বারে বারে কাজ থামিয়েও আবার কেন চালু করা হলো, অথবা বিএসএফ যে অনুমোদনের কথা বলছে তা থাকলে সমস্যা হলো কেন?

এ বিষয়ে বিজিবি রাজশাহী ব্যাটালিয়নের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. ইমরান ইবনে আব্দুর রউফ বিবিসিকে জানান এখানে অনুমোদন নিয়ে থাকলেও এক্ষেত্রে যে প্রটোকল বা নিয়মনীতি পালনের কথা সেগুলো মানা হয়নি। যারা মাঠে কাজ করেন তাদের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না এবং সাধারণত এমন সিদ্ধান্তগুলো উপর পর্যায় থেকে আসতে হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

কর্নেল রউফ বলছিলেন, “প্রথম দফায় মনে করেন কোম্পানি লেভেলে হয়েছে, আমি জানি এটা সমাধান হবে না। তারপর ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লেভেলে হলো, ওখানেও সমাধান হলো না। তারপর সন্ধ্যায় আমার সাথে সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে হলো। ওখানেও শেষ কথা এমন ছিল যে আমরা দুই পক্ষই অর্ডারবাউন্ড, আমাদের উপর থেকে যে আদেশটা আসবে আমরা সেটাই করব। এই মুহূর্তে আমরা উত্তেজনা প্রশমনের জন্য যেটুকু দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে, সেটা আমরা দেব।”

পতাকা বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, “তারা বলছিল ২০১৬ সালে এরকম মিটিং হয়েছিল, অনুমোদন পেয়েছে, আমরা বলেছি ২০২১ সালের আমাদের একটা চিঠি আছে যেখানে আমরা বলেছি অনুমোদন হয়নি, জয়েন্ট সার্ভে করার জন্য, যেটা হয় এটা। এটার কোনও উত্তর দেয়া হয়নি, এখন ২৫ এ এসে বানানো শুরু করে দেয়া এটা কেমন কথা?”

নওগাঁর সীমান্তেও অনেকটা একই ধরনের বিষয় হয়েছে যেখানে বিএসএফের দিক থেকে পুরনো অনুমোদনের কথা বলা হচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশের দিকে বিষয়টি মীমাংসিত না বলে উল্লেখ করেন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

News Team

Popular Post

সীমান্তে ‘জয় শ্রী-রাম’, ‘আল্লাহু আকবার’ স্লোগান; কী হয়েছিল?

Update Time : 03:31:38 am, Sunday, 12 January 2025
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের একটি অংশে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়ে তিন দিন ধরে একরকম টানাপড়েন বা উত্তেজনার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং নওগাঁ জেলা সংলগ্ন সীমান্তের ভারতের দিকের অংশে বেড়া নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশ অংশ থেকে বাধা দেয়া হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা সীমান্তের বাংলাদেশ-ভারত দুই দিকেই গ্রামের মানুষজন জড়ো হয় সীমান্তরক্ষীদের সাথে। দুই দিকেরই বেশকিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।

এতে দেখা গিয়েছে বাংলাদেশ অংশে বেশি সংখ্যক লোকজন জড়ো হয়েছে, অন্যদিকে ভারত অংশে কিছু মানুষকে লাঠি রামদা, কাস্তের মতো অস্ত্র হাতে ‘বান্দে মাতরম’ স্লোগান দিতেও দেখা যায়। যদিও বিবিসি স্বাধীনভাবে এ ভিডিও যাচাই করতে পারেনি।ঘটনার সূত্রপাত হয় সোমবারে। চৌকা সীমান্তের অপর পারে ভারতের মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগর থানার সুকদেবপুর এলাকায় বেড়া নির্মাণের তৎপরতা দেখা যায়।

সীমান্তের ১২০০ গজের মতো অংশে কোনও কাঁটাতারের বেড়া ছিল না এবং সেই বেড়া তৈরির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে ভারতের অভ্যন্তরে ১০০ গজ ভেতরে মাটি খোঁড়া হচ্ছিল বলে জানান ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া। বিজিবি থেকে এনিয়ে বাধা দেয়া হয় এবং সাময়িকভাবে কাজ থামানো হয়।

নিয়ম অনুযায়ী সীমান্ত লাইন থেকে দেড়শ গজের মধ্যে কিছু করা হলে সেটা অপর পাশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে সঠিক নিয়ম মেনে অবহিত করতে হয় যেটা এক্ষেত্রে ভারতের বিএসএফ বাংলাদেশের বিজিবিকে জানায়নি বলে জানান লে. কর্নেল কিবরিয়া।

সোমবার দুই দেশের বাহিনীর পতাকা-বৈঠক হলেও মঙ্গলবারে আবারও নির্মাণকাজ শুরু হয়।

মঙ্গলবারেও দুই পক্ষের বৈঠক হয় এবং তার পরও বুধবারে আবারও একই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হয়।এনিয়ে স্থানীয় দুজন সাংবাদিক বিবিসি বাংলাকে জানান মূলত মঙ্গলবার ও বুধবারে ব্যাপকহারে মানুষের জমায়েত বেড়ে যায় এবং একরকম উত্তেজনার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ভারতের দিকেও বিএসএফের সাথে সেখানকার স্থানীয় লোকজনও ছিল।

বাংলাদেশের অংশের মানুষ ভারতের উদ্দেশে এবং ভারতীয় অংশের মানুষ বাংলাদেশের উদ্দেশে স্লোগান দেন বলে জানান বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন।

তিনি বলেন, “পাবলিক পাবলিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে, এসো, সামনাসামনি হও, দুঘণ্টার মধ্যে দখল করে নিবো”

ভারতের অংশে তোলা কিছু ছবি ও ভিডিও বিবিসিকে পাঠান বাংলাদেশি অংশের স্থানীয় সাংবাদিক মো. কাওসার আহমেদ।

সেখানে অনেকর হাতে রামদা দেখা গেলেও একরকম হাস্যরসাত্মক পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়। যেমন- একজন রামদা শানাচ্ছেন বাংলাদেশ থেকে কেউ এলে কাটার জন্য শান দিচ্ছেন বলে হাসতে হাসতে জানান। আরেকজন কাঁধে বস্তা নিয়ে মশকরাচ্ছলে ভিডিওতে বলছেন, “বোম, বোম, বোম, ফুটিয়ে দেব বাংলাদেশকে।”বাংলাদেশ অংশের মানুষের মধ্যে অবশ্য উৎসাহ উদ্দীপনার পাশাপাশি উৎকণ্ঠাও ছিল বলে জানান কাওসার আহমেদ যিনি সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিদিনই ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।

তিনি বলছিলেন, অপরপাশ থেকে ‘বন্দে মাতারাম’ ‘জয় শ্রীরাম’ এমন স্লোগান দেয়া হচ্ছিলো, তখন এপারের মানুষ ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার’ বলে জবাব দেয়। এখানে বাংলাদেশ অংশে সীমান্ত ঘেঁষে যেসব কৃষকদের জমি রয়েছে তাদের মধ্যে শঙ্কার জায়গাটা বেশি।

সবশেষ সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ের সৌজন্য সাক্ষাতের পর বিষয়গুলো ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে অবহিত করা হয়েছে এবং এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। বৃহস্পতিবার আর নির্মাণকাজ চালানো হয়নি বলে জানান ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া।

বিজিবির বেশ কয়েকজন জানান আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী শূন্য রেখা বরাবর দুই দেশের অন্তত দেড়শ গজের মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণ করতে হলে দুই দিকের সম্মতির প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশ-ভারতের ১৯৭৫ সালের নীতিমালা অনুযায়ী সীমান্ত লাইন নির্ধারিত হওয়ার পর লাইনের উভয় পাশে ১৫০ গজের মধ্যে কোনও পক্ষই স্থায়ী বা অস্থায়ী সীমান্ত রক্ষী বা সশস্ত্র কর্মী রাখবে না এবং উভয় পাশে ১৫০ গজের মধ্যে (মোট ৩০০ গজ এলাকায়) কোনও প্রতিরক্ষামূলক কাঠামো, যেমন পরিখা বা অন্যকিছু থাকলে সেগুলো ধ্বংস বা ভরাট করতে হবে।

বিএসএফের একজন কর্মকর্তা অবশ্য বিবিসি বাংলার কলকাতা প্রতিনিধিকে জানান বেড়া নির্মাণের কাজটি আগে থেকে অনুমোদন সাপেক্ষেই করা হয়েছে।

মঙ্গলবারে বিএসএফের সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি এবং মুখপাত্র এন কে পাণ্ডে বিবিসিসহ পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিকদের জানান তেমন কোনও সমস্যার কিছু না, আমাদের বেড়া নির্মাণের কাজ চলছে, যেটায় অপর পাশ থেকে আপত্তি জানানো হয়েছিল যার জবাব দেয়া হয়েছে, কাজের অগ্রগতি চলছে।

যদিও বৃহস্পতিবারে আর নির্মাণকাজ আর চালু করা হয়নি বলে জানানো হচ্ছে বিজিবির দিক থেকে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে বারে বারে কাজ থামিয়েও আবার কেন চালু করা হলো, অথবা বিএসএফ যে অনুমোদনের কথা বলছে তা থাকলে সমস্যা হলো কেন?

এ বিষয়ে বিজিবি রাজশাহী ব্যাটালিয়নের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. ইমরান ইবনে আব্দুর রউফ বিবিসিকে জানান এখানে অনুমোদন নিয়ে থাকলেও এক্ষেত্রে যে প্রটোকল বা নিয়মনীতি পালনের কথা সেগুলো মানা হয়নি। যারা মাঠে কাজ করেন তাদের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না এবং সাধারণত এমন সিদ্ধান্তগুলো উপর পর্যায় থেকে আসতে হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

কর্নেল রউফ বলছিলেন, “প্রথম দফায় মনে করেন কোম্পানি লেভেলে হয়েছে, আমি জানি এটা সমাধান হবে না। তারপর ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লেভেলে হলো, ওখানেও সমাধান হলো না। তারপর সন্ধ্যায় আমার সাথে সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে হলো। ওখানেও শেষ কথা এমন ছিল যে আমরা দুই পক্ষই অর্ডারবাউন্ড, আমাদের উপর থেকে যে আদেশটা আসবে আমরা সেটাই করব। এই মুহূর্তে আমরা উত্তেজনা প্রশমনের জন্য যেটুকু দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে, সেটা আমরা দেব।”

পতাকা বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, “তারা বলছিল ২০১৬ সালে এরকম মিটিং হয়েছিল, অনুমোদন পেয়েছে, আমরা বলেছি ২০২১ সালের আমাদের একটা চিঠি আছে যেখানে আমরা বলেছি অনুমোদন হয়নি, জয়েন্ট সার্ভে করার জন্য, যেটা হয় এটা। এটার কোনও উত্তর দেয়া হয়নি, এখন ২৫ এ এসে বানানো শুরু করে দেয়া এটা কেমন কথা?”

নওগাঁর সীমান্তেও অনেকটা একই ধরনের বিষয় হয়েছে যেখানে বিএসএফের দিক থেকে পুরনো অনুমোদনের কথা বলা হচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশের দিকে বিষয়টি মীমাংসিত না বলে উল্লেখ করেন তিনি।