জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ক্ষমতাকে শ্বশুরবাড়ির নিয়ামত ভাববেন না। এটা জনগণের ও রাষ্ট্রের আমানত। এই আমানতের খেয়ানত করবেন না। অথচ স্বাধীনতার পরে দফায় দফায় যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা আমানতের খেয়ানত করেছে। কম-বেশি সবাই এ জাতিকে কষ্ট দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়েছে গত ১৫ বছর। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী দিয়ে শুরু করে একটার পর একটা হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে আওয়ামী লীগ।
গতকাল বেলা ১২টায় নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে নাটোর জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। শফিকুর রহমান বলেন, এত মানুষ জীবন দিয়েছে কেন? তারা চেয়েছে বৈষম্যহীন সমাজ। তারা বলেছে, আমরা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে। ১০ মাসের সন্তান থেকে শুরু করে ৮০ বছরের বৃদ্ধ জুলাই আন্দোলনে নেমেছিল। সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছিল। আওয়ামী লীগ বিভিন্ন দলের দেশপ্রেমিক নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। নির্বাচন তাদের জন্য, যারা দেশের মাটিকে আমানত মনে করে। আমরা চাই অতিদ্রুত সংস্কার করে দেশে একটি নির্বাচন দিক। আশা করি তারা সেই দিকেই যাবে।
জামায়াতের আমীর বলেন, যারা বাংলাদেশে অকাম-কুমাম করেছে, তারাই মানুষকে চোর বলতো। যারা মানুষের সম্পদ, ইজ্জতের ওপর হাত দিচ্ছে না তাদের মানুষ গ্রহণ করবে। পটপরিবর্তনের পর নেতাকর্মীদের বলেছি, সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা যুবকের হাতকে দেশ গড়ার হাতে পরিণত করবো। তিনি বলেন, আমরা বিদেশি বন্ধু চাই, প্রভু চাই না। আমরা পিণ্ডির হাত থেকে মুক্ত হয়েছি অন্য কারও হাতে যাওয়ার জন্য নয়। কারও লাল চোখ আমরা দেখতে চাই না। জামায়াতে ইসলাম বৈষম্যহীন মানবিক সমাজ করতে চায়। আমরা বিভেদ নয়, ঐক্য চাই। এদেশের হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই গর্বিত নাগরিক।
শফিকুর রহমান বলেন, নাটোর একটি ঐতিহাসিক জেলা। অথচ এই জেলার কোনো সময় উন্নয়ন হয়নি। এখানে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত নেই। সরকারকে এ ব্যাপারে নজর দিতে হবে। আর জামায়াত যদি কোনোদিন রাষ্ট্রের উন্নয়নের এই দায়িত্ব পায় তাহলে সুষম নীতিতে উন্নয়ন করবে। আর জামায়াত যদি বিরোধী দলে থাকে তাহলে, সুষম উন্নয়ন না হওয়ার প্রতিবাদ আপনাদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে তাল মিলিয়ে করবে, উন্নয়ন আদায় করে নেয়া হবে। স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের সহায়তার জন্য সরকারের দৃশ্যত কার্যক্রম দেখতে চায় জামায়াত।
জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক ড. মীর নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- জামায়াতে ইসলামের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, মোবারক হোসেন, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক ইউনুস আলী, নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন খান ও সহকারী সেক্রেটারি আতিকুল ইসলাম রাসেল প্রমুখ। পরে বিকালে জামায়াতের আমীর ডাক্তার শফিকুর রহমান স্থানীয় অনিমা চৌধুরী অডিটোরিয়ামে এক সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।